বাংলাট্রিবিউন : চট্টগ্রামে স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিনের মৃত্যুর ঘটনায় তার বন্ধু আদনানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১০ মে) গাজীপুর যাচ্ছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তাকে গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কর্ণফুলী জোন) জাহেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে তাসফিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় গত ৩ মে দুপুরে তার বাবা মোহাম্মদ আমিন আদনানসহ ছয়জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গত বুধবার (২ মে) আদনানকে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার (৩ মে) আদালতে নিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। গত রবিবার (৬ মে) শুনানি শেষে আদালত তাকে রিমান্ডে না পাঠিয়ে গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কের সামনে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়। পাশাপাশি তদন্ত কর্মকর্তাকে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।

জাহেদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তাসফিয়ার মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে আমরা অনেকদূর এগিয়েছি। কেমিক্যাল অ্যানালাইসিস, ভিসেরা ও ভ্যাজাইনা সোয়াফ রিপোর্টগুলো পেলে আমরা একটা সিদ্ধান্তে যেতে পারবো।’

তিনি বলেন, ‘ঘটনার রহস্য উন্মোচনে আমরা মামলার আসামি তাসফিয়ার বন্ধু আদনানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছিলাম। আদালত গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কের সামনে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। আগামীকাল (১০ মে) তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আগামীকাল মামলা তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন ও পতেঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী মোহাম্মদ ফৌজুল আজিম গাজীপুর যাবেন।’

মামলার অপর আসামিরা হলেন, সোহেল (১৬), শওকত মিরাজ (১৬), আসিফ মিজান (২৩), ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম (২৪) ও ফিরোজ (৩০)। তবে মামলা দায়েরের পর গত সাত দিনেও পুলিশ অপর ৫ আসামির একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি।

সহকারী পুলিশ কমিশনার (কর্ণফুলী জোন) জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্ট থেকে কর্ণফুলী নদীর ১৫ নম্বর ঘাট পর্যন্ত সবগুলো সিসিটিভি ফুটেজ অ্যানালাইসিস করেছি। সানশাইন স্কুলে গিয়ে মামলা অন্য আসামিদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছি। ভিকটিমের পরিবার ও গ্রেফতার আদনানের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। সম্ভাব্য সকল দিক থেকে যাছাই-বাছাই করে দেখেছি। এখন পর্যন্ত আমরা তাসফিয়ার ধর্ষিত হওয়ার কোনও আলামত পাইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘চায়না গ্রিল থেকে বের হয়ে তাসফিয়া তার বাসায় গিয়েছিল কিনা আমরা সেটিও খতিয়ে দেখেছি। কিন্তু এ ধরনের কোনও তথ্য প্রমাণ আমরা পাইনি। আমরা তাসফিয়ার বাসার পাশের বাসার সিসিটিভি ফুটেজ অ্যানালাইসিস করে দেখেছি।’

উল্লেখ্য, গত ২ মে সকালে নগরীর পতেঙ্গার ১৮ নম্বর ব্রিজঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীরে তাসফিয়ার লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশটি উদ্ধার করে। পরে লাশের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন থানায় গিয়ে মরদেহটি তাসফিয়া আমিনের। তাসফিয়া নগরীর সানশাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তাদের গ্রামের বাড়ি টেকনাফের ডেইল পাড়া এলাকায়। তাসফিয়া পরিবারের সঙ্গে নগরীর ওআর নিজাম আবাসিক এলাকার তিন নম্বর সড়কের কে আর এস ভবনে থাকতেন। এর আগে ঘটনার আগের দিন মঙ্গলবার (১ মে) সন্ধ্যায় তাসফিয়া তার বন্ধু আদনানের সঙ্গে রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল।